ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার পাঁচুয়া গ্রামে ১৩২৬সনের ২৬ আশ্বিন(১৯১৯খ্রিঃ)আব্দুল জব্বার জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় পাঠশালায় কিছুকাল অধ্যয়নেরপর দারিদ্রের কারণে লেখাপড়া ছেড়ে তিনি পিতাকে কৃষি কাজে সাহায্য করেন। পনেরো বছর বয়সে অধিক রোজগারের আশায় একদিন সকলের অজান্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন যোগে নারায়ণগঞ্জ চলে আসেন। সেখানে জাহাজ ঘাটে তিনি এক ইংরেজ সাহেবের সান্নিধ্যে আসেন এবং তারই সহায়তায় আব্দুল জব্বার একটি চাকরি নিয়ে বার্মায় চলেযান।
বার্মায় অবস্থানকালে তিনি ইংরেজি ভাষা রপ্ত করেন।প্রায় বারো বছরপর তিনি দেশে ফিরে আসেন। ১৯৫২সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত শাশুড়ির চিকিৎসার জন্য তিনি স্ত্রী সহ ঢাকায় আসেন। ২০ ফেরুয়ারি শাশুড়িকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে আবদুল জব্বার মেডিকেলের ছাত্রদের আবাসস্থল(ছাত্রব্যারাক) গফরগাঁও নিবাসী হুরমত আলীর রুমে(২০/৮) উঠেন।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে ব্যাপক জন সমাবেশ ঘটে। আবদুল জব্বারও সমাবেশে যোগ দেন। সেসময়ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ গুলি চালালে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ২০০০সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। বর্তমানে তার নামে একটি জাদুঘর ও শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়।
ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলাধীন ০৬নং রাওনা ইউনিয়নের “জব্বার নগর” (পাচুয়া) গ্রামে ভাষা শহীদ আঃ জব্বারের নিজ বাড়ির নিকটে শহীদ জব্বার বেসরকারি রেজিস্টার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শহীদ মিনারের পার্শ্বের জমিতে ২০০৭ সালে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এটি গফরগাঁওয়ের একটি দর্শনীয় স্থান।